৭ই মার্চ সন্ধ্যায় ঢাকার গুলিস্তান এলাকায় একটি ভবনে বিস্ফোরণে অন্তত ১৭ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের কাছে বিস্ফোরণটি ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে বিশাল বিস্ফোরণের কারণ জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালেদ জানান, ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট উদ্ধার অভিযান চালাতে ঘটনাস্থলে কাজ করছে।
গুলিস্তান বিআরটিসি কাউন্টারের দক্ষিণ পাশে একটি পাঁচতলা বিল্ডিং, নিচতলায় একটি স্যানিটারি দোকান এবং বাকি তলায় ব্র্যাক ব্যাংকের অফিস এবং তার পাশের একটি সাততলা স্যানিটারি মার্কেট ভবন বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, কোনো ভবন ধসে পড়েনি।
ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি ডিরেক্টর ডিনোমনি শর্মা মিডিয়াকে জানান, নর্থ সাউথ রোডের ১৮০/১ হোল্ডিং-এ একটি বিল্ডিংয়ে বিস্ফোরণটি ঘটে।
বিস্ফোরণে ভবনের উল্টোদিকে দাঁড়ানো একটি বাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, এ পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং দুই শতাধিক আহতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ১৫ জন পুরুষ ও দুজন নারী।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “এটি একটি প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। আমরা আহতদের এবং তাদের স্বজনদের সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।”
এদিকে নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী হাফিজুল আমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে রাতেই তারা অভিযান শুরু করেছেন। তারা প্রক্রিয়াটি মসৃণ করতে একটি অস্থায়ী বুথ স্থাপন করেছে, তিনি যোগ করেন।
তিনি বলেন, বুধবার সকাল ১টা পর্যন্ত ১১ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা এবং আহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসকের সংখ্যা ৫০ করা হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখন রক্তের ব্যবস্থা করার কাজ করছে। দুই-তিন ঘণ্টা পর জানা যাবে রক্ত লাগবে কি না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, গুলিস্তান এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা নাশকতা নয়, দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা সন্দেহ করছি এটি একটি দুর্ঘটনা। এটি নাশকতা কিনা তা খুঁজে বের করতে বিভিন্ন ইউনিট কাজ করছে। এখন পর্যন্ত ঘটনাস্থলে নাশকতার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।” ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডুর একটি অক্সিজেন প্লান্ট এবং ঢাকার সায়েন্স ল্যাব এলাকায় একটি মার্কেটে বিস্ফোরণের কয়েকদিনের মধ্যেই এ ঘটনা ঘটে।